Organization Name:
Short Name:
DCTANGAIL
Application Start Date:
June 12, 2022
Application End Date:
June 27, 2022
Status:
Live
Adv No:
05.41.9300.011.01.021.22-243
Web Link:
Type: Government Job
Total Views: 436
Job ID: #GJOB3668
Publish Date: June 12, 2022
Deadline Date: June 27, 2022
Teletalk Job does not charge any fee at any stage of the recruitment process.
Please note that Teletalk Job is an equal employment organization. Any form of persuasion will disqualify the candidature.
Apply Procedure
Application Deadline: June 27, 2022
Organization Name: DC Office Tangail (DCTANGAIL)
Short Name: DCTANGAIL
Details: টাঙ্গাইলের নামকরণ বিষয়ে রয়েছে বহুজনশ্রুতি ও নানা মতামত। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত রেনেল তাঁর মানচিত্রে এ সম্পূর্ণ অঞ্চলকেই আটিয়া বলে দেখিয়েছেন। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের আগে টাঙ্গাইল নামে কোনো স্বতন্ত্র স্থানের পরিচয় পাওয়া যায় না। টাঙ্গাইল নামটি পরিচিতি লাভ করে ১৫ নভেম্বর ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে মহকুমা সদর দপ্তর আটিয়া থেকে টাঙ্গাইলে স্থানান্তরের সময় থেকে। টাঙ্গাইলের ইতিহাস প্রণেতা খন্দকার আব্দুর রহিম সাহেবের মতে, ইংরেজ আমলে এদেশের লোকেরা উচু শব্দের পরিবর্তে ‘টান’শব্দই ব্যবহার করতে অভ্যস্ত ছিল বেশি। এখনো টাঙ্গাইল অঞ্চলে ‘টান’শব্দের প্রচলন আছে। এই টানের সাথে আইল শব্দটি যুক্ত হয়ে হয়েছিল টান আইল। আর সেই টান আইলটি রূপান্তরিত হয়েছে টাঙ্গাইলে। আরেক জনশ্রুতি মতে নীলকর টেংগু সাহেবের গল্পই সব চেয়ে বেশি প্রচলিত। বৃটিশ শাসনের প্রায় প্রারম্ভে আকুরটাকুর ও শাহবালিয়া মৌজার মধ্যবর্তী এলাকায় টেংগু সাহেবের নীল চাষ ও নীলের কারখানা ছিল। পূর্বোক্ত দুই মৌজার সীমানা বরাবর তিনি উচু মেটোপথ বা আইল যাতায়াতের জন্য তৈরী করেছিলেন। ক’জন সাধারণ এই আইল কে টেংগু সাহেবের আইল বলে উল্লেখ করতো। সুতরাং অনুমান করা হয় যে, টাঙ্গাইল শব্দটি টেংগু সাহেবের আইল নামেরই অপভ্রংশ। আবার তরুণ গবেষক ইতিহাসবিদ, অনুবাদক জনাব খুররম হোসাইন তার ‘টাঙ্গাইলের স্থান নামঃ ইতিহাস ও কিংবদন্তী’নামক এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেন যে, সুবাদার শায়েস্তাখান সামরিক উর্দির নীচে ছিল যার অসাধারণ কুটবুদ্ধি আর প্রশাসনিক দক্ষতা। মগ আর পর্তুগীজ জলদস্যুদের দমন করা যখন কোন ক্রমেই সম্ভব হচ্ছিলো না। তখন তাঁর চিন্তায় আসে দক্ষিণ ভারতের মালাবর অঞ্চলের মোপলাদের কথা, সমুদ্র পাড়ের এই সব মোপলা, যারা অসম সাহসী যোদ্ধা, সম্মুখ যুদ্ধে যারা কখনও পিছু হটে না, সেই সব মোপলাদের নিয়ে এলেন রংরুট করে। জলদস্যুদের উৎপাত যখন কিছুটা দমিত হলো তখন তাদের বসতির স্থান নির্ধারণ করলেন বর্তমান টাঙ্গাইল শহরের পশ্চিম প্রান্তে। মোপলাদের ধর্মগুরুকে তারা নিজস্ব ভাষায় তাংগাইল বলে টাঙ্গাইল এই মোপলা সম্প্রদায় আজও টিকে আছে। এই অঞ্চলের যারা নিজেদের পরিচয় দেয় মাহিফরাস বলে। মৎস্য ব্যবসা যাদের প্রধান জীবিকা। টাঙ্গাইল অঞ্চলের লোকজন তাদেরকে নিকারি বলে জানে। পূবোল্লিখিত বিষয়গুলো বিচার করে আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি যে, মোপলাদের সর্দারকে যে স্থানে জায়গা দেয়া হয়েছিল সেই স্থানটিই ক্রমে টাঙ্গাইল নামে পরিচিত হতে থাকে। এমতটির পেছনে রয়েছে যথেষ্ট ঐতিহাসিক প্রমাণাদি। ডঃ তারা চাঁদের "The influence of Islam on Indian culture"- গ্রন্থেও এ বিষয়ে সাক্ষ্য মেলে। টাঙ্গাইলের নামকরণ নিয়ে আরো বিভিন্নজনে বিভিন্ন সময়ে নানা মত প্রকাশ করেছেন। কারো কারো মতে, বৃটিশ শাসনামলে মোগল প্রশাসন কেন্দ্র আটিয়াকে আশ্রয় করে যখন এই অঞ্চল জম-জমাট হয়ে উঠে। সে সময়ে ঘোড়ার গাড়িছিল যাতায়াতের একমাত্র বাহন, যাকে বর্তমান টাঙ্গাইলের স্থানীয় লোকেরা বলত ‘টাঙ্গা’। বর্তমান শতকের মাঝামাঝি পর্যন্তও এ অঞ্চলের টাঙ্গা গাড়ির চলাচল স্থল পথে সর্বত্র। আল শব্দটির কথা এ প্রসঙ্গে চলে আসে। বর্তমান টাঙ্গাইল অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের নামের সাথে এই আল শব্দটির যোগ লক্ষ্য করা যায়। আল শব্দটির অর্থ সম্ভবত সীমা নির্দেশক যার স্থানীয় উচ্চারণ আইল।একটি স্থানকে যে সীমানা দিয়ে বাঁধা হয় তাকেই আইল বলা হয়। টাঙ্গাওয়ালাদের বাসস্থানের সীমানাকে ‘টাঙ্গা+আইল’এভাবে যোগ করে হয়েছে ‘টাঙ্গাইল’এমতটি অনেকে পোষণ করেন। ইতিহাসবিদ মুফাখখারুল ইসলামের মতে, কাগমারি পরগণার জমিদার ইনাযাতুল্লাহ খাঁ চৌধুরী (১৭০৭-১৭২৭খ্রিস্টাব্দ) লৌহজং নদীর টানের আইল দিয়া কাগমারী আধামাইল দূরে খুশনুদপুর (খুশির জায়গা যার সংস্কৃতায়ন করলে সন্তোষ) তাঁর সদর কাচারিতে যাতায়াতে করতেন। এই টানের আইল বা টান আইল বলিয়া বলে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চারিত হতে হতে টাঙ্গাইল নামকরণ হয়েছে। অন্য মতবাদে জানা যায় ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ সরকারের আদেশ অনুযায়ী পারদীঘুলিয়া মৌজায় অন্তর্গত আতিয়া নামক গ্রামে টান-আইল থানার সদর স্থ্পন করা হয়। গত শতাব্দীর মধ্যবর্তীকালীণ সময়ে টান-আইল মৌজা টাঙ্গাইল নামের রূপান্তরিত হয়। আইল শব্দটি কৃষিজমির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই শব্দটি আঞ্চলিক ভাবে বহুল ব্যবহৃত শব্দ। টাঙ্গাইলের ভূ-প্রকৃতি অনুসারে স্বাভাবিক ভাবে এর ভূমি উঁচু এবং ঢালু। স্থানীয়ভাবে যার সমার্থক শব্দ হলো টান। তাই এই ভূমিরূপের কারণেই এ অঞ্চলকে হয়তো পূর্বে ‘টান আইল’বলা হতো। যা পরিবর্তীত হয়ে টাঙ্গাইল হয়েছে।অন্য একটা সূত্রে জানা যায় হযরত শাহ জামাল (রাঃ) জাহাজ যোগে এদেশে আগমন করার সময় মাদ্রাজ থেকে একদল জেলে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। এদের দলপতির নাম ‘টাংগা’। জেলেরা লৌহজং নদীর পূর্ব তীরে বসবাস শুরু করে। তাদের দলপতির নামানুসারে স্থানের নাম হয় ‘টাঙ্গাইল’। পূর্বে টাঙ্গাইল অপেক্ষাকৃত নিচু অঞ্চল ছিলো। এখানকার মানুষ বসবাসের জন্য মাটির উপর বাঁশ পুঁতে টং ঘর নির্মাণ করতো। টং ফরাসী শব্দ, অর্থ হলো উঁচু। অতীত সময়ে স্থানীয় অনার্য বাসিন্দারা বাসস্থানকে ‘ইল’বলতো। তাই কারো কারো মতে এই টংইল (উঁচু বাসস্থান) থেকে টাঙ্গাইল নামের উৎপত্তি। জনশ্রুতিতে আরো আছে যে, ব্রিটিশ আমলে নীল ব্যবসার চরম উন্নতির সময়ে বর্তমানের টাঙ্গাইল শহরে অসংখ্য টাংগা গাড়ির ভিড় লেগে থাকতো। তা থেকেই আঞ্চলিক নাম টাঙ্গাইলের উৎপত্তি। টাঙ্গাইল জেলা গেজেটিয়ারে নামকরণ বিষয়ে সর্বাগ্রে যে তথ্যটি উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো, সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে নবাব শায়েস্তা খাঁ বাংলার সুবেদার ছিলেন।তাঁর শাসনকালে পর্তুগীজ মগ জনদস্যুদের হামলা ও অত্যাচার বঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে চরমে পেঁŠছেছিলো। শায়েস্তা খাঁ পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য দাক্ষিণাত্যের মোগলদের নিয়ে এক শক্তিশালী নৌ-বাহিনী গঠণ করে ছিলেন। কালক্রমেই এই নৌ-বাহিনী ভেঙ্গে দেওয়া হলে এদের অনেকেই দক্ষিণ ভারতে মালাবাদ উপকূলে প্রত্যাবর্তন না করে লৌহজং নদীর চর এলাকায় বসতি স্থাপন করে।এসব নতুন গড়ে ওঠা বসতিগুলোকে মোগলরা অভিহিত করেছিলেন দিহ্ টাঙ্গাল (দিহ্ শব্দের ফরাসী অর্থ হলো মহল্লা) যা কালক্রমে টাঙ্গাইল হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ আদম শুমারী রিপোর্ট সূত্রে জানা যায় দাক্ষিণাত্যে মালাবার সমুদ্র উপকূল এলাকায় ‘মোপলা’নামে এক জাতি বাস করত। তারা আরব বণিকদের বংশধর এবং এতদঞ্চলের মেয়েদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবব্ধ হত। মোপলাদের মধ্যে অত্যন্ত ক্ষমতাশীল ধর্মীয় নেতাদেরকে ‘তাংগাইল’বলা হতো। এসমস্ত ধর্মীয় নেতাদের নামানুসারেই পরবর্তীকালে বর্তমান ‘টাঙ্গাইল’নামকরণ হয়েছে। কথিত আছে জনৈক ইংরেজ সন্তোষ জমিদারিতে ব্রিটিশ আমলে রাজস্ব আদায় করতে এসেছিলেন। রাজস্ব আদায় শেষে ঢাকা যাওয়ার পথে একদল ঠগ রাজস্বের অর্থ লুটপাট করে সেই সঙ্গে ইংরেজ সাহেবকে হত্যা করে লৌহজং এর পূর্ব পারে টাংগিয়ে রেখে যায়। সেই থেকে নাম দেওয়া হয়েছে টাঙ্গাইল। আবার কারো করো মতে ‘টান’এবং ‘ইল’নামক দু’জন ইংরেজ সাহেব সন্তোষ জমিদারিতে এসেছিলেন থানার স্থান নির্বাচনের জন্য তাদের নামানুসারে নাম হয়েছে টাঙ্গাইল। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানের নামে ‘আইল’শব্দের আধিক্য আছে (যেমন- বাসাইল, ঘাটাইল, ডুবাইল, নিকরাইল, রামাইল ইত্যাদি) অনেকের ধারণা টাঙ্গাইলের অন্য স্থানের নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঘটনা প্রবাহে ‘টাঙ্গাইল’নাম হয়েছে। টং শব্দের ফরাসী অর্থ উঁচু। আর আইল হচ্ছে আবাদী জমির সীমানা সংলগ্ন অংশ। টাঙ্গাইল জেলা প্রাচীনকাল থেকে পাহাড়ের উঁচু ভূমি ও নিকটবর্তী কৃষি জমির সমাহার। এই উঁচু ভূমি বা টং ও জমির ‘আইল’এই দুইয়ের সমন্বয়ের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের এলাকার নাম টাঙ্গাইল হয়েছে।
http://www.tangail.gov.bd/en